ঢাকা বিমানবন্দরের অদূরে মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে৷ তাদের মধ্যে অধিকাংশই শিক্ষার্থী৷ এরকম ভয়াবহ ঘটনা আমাদের সবাইকে থমকে দেয়৷ কিন্তু দুয়েকজন উপদেষ্টা পদত্যাগ করলেই কি এরকম ঘটনা রোখা যাবে?
উত্তর হচ্ছে যাবে না৷ কারণ সমস্যা অনেক গভীরে৷ একদিনে এই সমস্যা তৈরি হয়নি৷ আর এই সমস্যার পেছনে রয়েছে রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি আর সামরিক বাহিনীকে বাড়তি সুযোগসুবিধা দিয়ে সন্তুষ্ট রাখার প্রবণতা৷ কিন্তু এসব বিষয়ে কথা বলতে অনেকই অস্বস্তিবোধ করেন, ভয় পান৷
আদতে আরেকটি মাইলস্টোন ট্রাজেডি যাতে না ঘটে সেজন্য নগর পরিকল্পনায় মনোযোগ দিতে হবে৷ নিয়ম আর আইনকানুন যে দুর্নীতিতে চাপা পড়ে যায় সেই দুর্নীতি দূর করতে উদ্যোগী হতে হবে৷ বিমানবন্দরের কাছে যেখানে এধরনের স্থাপনা তৈরির কথা নয়, সেখানে স্কুলের মতো স্থাপনা কীভাবে তৈরি হলো খতিয়ে দেখতে হবে৷ দোষীদের শাস্তি দিতে হবে৷
ঢাকার মত একটি ঘনবসতিপূর্ণ রাজধানীর মাঝে সেনানিবাস, বিমান ঘাঁটি না রেখে সেগুলো সরিয়ে এমন কোথাও নিতে হবে যেখানে অপেক্ষাকৃত জনসমাগম কম৷ বিশেষ করে প্রশিক্ষণের জন্য জনবিরল স্থান বেছে নেয়া উত্তম৷ বাংলাদেশে জনসংখ্যা আয়তনের তুলনায় বেশি হলেও এমন স্থান, জলসীমা খুঁজে পাওয়া কঠিন নয়৷
দেখা যাচ্ছে এসব আলোচনা বাদ দিয়ে বছরখানেক আগে বিশেষ পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেয়া একদল উপদেষ্টার পেছনে লেগে গেছেন রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবীরা৷ এটা নজর ঘোরানোর রাজনীতি৷ তারা এমন এক বয়ান তৈরি করতে চাচ্ছেন যা দীর্ঘমেয়াদে দুর্নীতিরোধের মতো বিষয়গুলোকে আড়াল করবে৷ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বিমানবাহিনী কেন প্রশিক্ষণের আয়োজন করে সেই আলোচনাও চাপা পড়ে যাবে নতুন বয়ানের আড়ালে৷
মাইলস্টোনের মতো ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেদিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে৷ আর সেজন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়া৷ সেদিকে নজর দেয়ার সময় এখনি৷