Home / মিডিয়া ওয়াচ / বৈষম্যবিরোধী নেতাদের ক্ষেত্রে কি মানবাধিকার প্রযোজ্য নয়?

বৈষম্যবিরোধী নেতাদের ক্ষেত্রে কি মানবাধিকার প্রযোজ্য নয়?

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতাসহ কয়েকজনকে চাঁদাবাজির অভিযোগে আটকের পর থেকে তাদের ব্যাপক মিডিয়া ট্রায়াল শুরু হয়ে গেছে৷ অথচ তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এখনো প্রমাণিত হয়নি, কোন প্রেক্ষাপটে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেটাও এখনো স্বচ্ছ নয় এবং যেদিন তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে আর কোনো এক রুমের ভেতরের যে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে সেটাও একই দিনের নয়৷

বাংলাদেশের সংবিধানের ৩১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, এমন কোনো বেআইনি পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না, যা কোনো ব্যক্তির জীবন, সুনাম এবং সম্পত্তির ক্ষতির কারণ হয়। এছাড়াও, দোষী প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত একজন ব্যক্তিকে অপরাধী বলা যাবে না।

কিন্তু অতীতের মতো রোববারও আমরা দেখলাম এই অনুচ্ছেদের কোনো বাস্তব প্রয়োগ হলো না৷ বরং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাসহ যাদেরকে চাঁদাবাজির অভিযোগ গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদেরকে আদালতে কথিত ‘‘সাধারণ আইনজীবীরা’’ আক্রমণ করলো, সন্দেহভাজনরা নিজেদের মুখ লুকাতে চাইলে পুলিশ জোর করে তাদের মুখ গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরলো যা এক চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন৷ এই তরুণরা কেউই এখনো তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়নি৷ অর্থাৎ এমনও হতে পারে যে তাদেরকে ফাঁসানো হয়েছে৷ কিন্তু তারা ন্যয়বিচারের সুযোগ পাওয়ার আগেই সাধারণ লেবাসধারী আইনজীবীদের হাতে পুলিশের উপস্থিতিতে হেনস্থার শিকার হলেন, এমনকি খোদ পুলিশ সদস্যরা, যাদের জিম্মায় তারা ছিলেন, তারাও তাদের সুনাম নষ্টের সর্বোচ্চ চেষ্টাই করলেন৷ তরুণদের মানবাধিকারের এই লঙ্ঘনের বিচার হওয়া জরুরী৷

লক্ষ্যণীয় হচ্ছে চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক এই তরুণরা যে হেনস্থার শিকার আদালতে হলেন সেটা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে খুব একটা উচ্চবাচ্য নেই৷ বরং যারা তাদের উপর হামলা করেছেন, তাদেরকে যাচাইবাছাই ছাড়াই ‘‘সাধারণ আইনজীবী’’ পরিচয় দিয়ে বিষয়টি একধরনের ন্যায্যতা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে৷ ভাবটা এমন, অরাজনৈতিক কিছু ব্যক্তি ক্ষুব্ধ হয়ে এমনটা করেছেন৷ সেটা করে থাকলে সেটাও অপরাধ৷ কিন্তু যাদের ‘‘সাধারণ’’ বলা হচ্ছে তারা যে সাধারণ সেটা সংবাদমাধ্যম নিশ্চিত হলো কীভাবে?

একই ঘটনা যখন সীমাহীন দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, গুম আর খুনের অভিযোগ ওঠা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ঘটানো হয় তখন সেটার সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে সুশীল সমাজ, সংবাদমাধ্যমের বড় একটা অংশ৷ কিন্তু এই তরুণদেরক্ষেত্রে মনে হচ্ছে একধরনের ক্ষোভ অনেকের মনে রয়েছে৷ যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে মুহূর্তের মধ্যে চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠার পরপরই৷

যেকারণে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসার সামনে দিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেনি৷ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সেটা করাই যেতে পারে৷ কিন্তু সাবেক এই প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে৷ কিন্তু তাকে গ্রেপ্তারের কোনো চেষ্টা নেই পুলিশের৷ এটার কারণ কী?

Tagged: