সম্প্রতি ৫ই আগস্টকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের বক্তব্য দাবিতে একটি এআই নির্মিত ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। ভিডিওটিতে বলতে শোনা যায়, “আজ ৫ই আগস্ট, পুলিশ হত্যা দিবস উপলক্ষে সকল শহীদ পুলিশ ভাইদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই।”
এই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও আছে এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
এই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজারের অধিক বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটি ২ শতাধিক বার শেয়ার করা হয়েছে।
প্রথমেই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে দেশীয় কোনো গণমাধ্যমে উক্ত দাবির পক্ষে কোনো প্রকার তথ্য কিংবা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ইনসাইড রিউমারস। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে এতে কিছু অসামঞ্জস্যতা পরিলক্ষিত হয়। যেমন, সেনাপ্রধানের কথার সঙ্গে তার ঠোঁটের নড়াচড়া পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, অনেক সময় মুখের ভঙ্গি ও শব্দের মিল খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়।
চোখের পলক পড়া, মুখের অভিব্যক্তি, এমনকি কথা বলার সময় শরীরের স্বাভাবিক নড়াচড়াও অনুপস্থিত বা খুব কম। আরও লক্ষণীয় বিষয় হলো, তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর কর্মকর্তাদের আচরণও স্বাভাবিক ভিডিওর তুলনায় অস্বাভাবিকভাবে ধীর এবং অনড় মনে হয়।
তারা এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকলেও চোখ, মুখ কিংবা শরীরের ভঙ্গিতে জীবন্ততার ঘাটতি স্পষ্ট। তাদের নাড়াচড়ায় যেন কোনো প্রাণ নেই, যা দেখে ভিডিওটিকে এক ধরনের স্থির বা অ্যানিমেটেড ফ্রেমের মতো মনে হয়।
সব মিলিয়ে, ভিডিওটি মানবীয় আচরণগত দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্লেষণ করলে এটিকে একটি AI বা Deepfake প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা ভিডিও বলেই পরিলক্ষিত হয়।
এর উপর ভিত্তি করে ভিডিওটি AI দিয়ে তৈরি কি না, তা যাচাই করতে ডিপফেক স্ক্যানার টুল ‘Deepware’ ব্যবহার করে ইনসাইড রিউমারস এবং Seferbekov মডেল ৯৬% নিশ্চিত করেছে যে ভিডিওটি ডিপফেক।
অর্থাৎ, সার্বিক পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণে এটি স্পষ্ট যে, পুলিশ হত্যার বিচারের কথা উল্লেখ করে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানের নামে ছড়ানো ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি।