সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে “আন্তর্জাতিকভাবে নিষেধাজ্ঞা হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী” দাবিতে একটি ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে।
এই দাবিতে ফেসবুকে পোস্ট আছে এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ইনসাইড রিউমারস। পর্যবেক্ষণে পুরো ভিডিওর কোথাও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা হতে যাচ্ছে সেনাবাহিনী শীর্ষক কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
ভিডিওটিতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য ইভান স্টিফানিক শান্তিরক্ষী মিশন থেকে বাংলাদেশের সেনাসদস্যদের প্রত্যাহারের দাবি কথা বলা হলেও বর্তমানে তিনি ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য নন। গত বছরের জুলাই মাসে তার মেয়াদ শেষ হয়েছে।
তবে গত বছরের জানুয়ারিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের আন্ডার-সেক্রেটারি জ্যঁ-পিয়ের লাক্রোয়ার কাছে পাঠানো এক চিঠিতে ইভান স্টিফানিক বাংলাদেশে চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান। সেই চিঠিকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আন্তর্জাতিকভাবে নিষেধাজ্ঞা পেতে যাচ্ছে বলে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সে সময়ে বাংলা গণমাধ্যম বাংলা আউটলুকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাতিসংঘ বরাবর ইভান স্টিফানিকের সেই চিঠিতে বলা হয় বাংলাদেশে ক্রমাগত মানবাধিকার লঙ্ঘন, নির্বিচারে আটক, নির্যাতন, জোর পূর্বক গুম এবং বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড সহ জঘন্য অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের ছয় হাজার ৫০০ সদস্য মোতায়েন রয়েছে উল্লেখ করে সিনেটের আইভান বলেন, “যেহেতু তারা এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনে সরাসরি জরিত তাই তাদের শান্তিরক্ষী মিশনে নিয়োগের মাধ্যমে পুরস্কৃত করাটা আমাদের দুঃখ দেয়।”
এছাড়াও, জাতিসংঘের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলো পর্যবেক্ষণ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উপর নিষেধাজ্ঞা আসতে যাচ্ছে এমন কোনো সম্ভাবনা দেখা যায়নি।
সার্বিক দিক বিবেচনায় এটি স্পষ্ট যে, জাতিসংঘ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।