সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে “খালেদা জিয়ার উপদেষ্টার বাসা থেকে বস্তা ভর্তি টাকা উদ্ধার” দাবিতে একটি ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে। ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে, বিএনপির বিতর্কিত নেতা ও দলীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবের বাসা থেকে ৭ বস্তা টাকা ও সিন্দুক ভর্তি টাকা পাওয়া গেছে।
এই দাবিতে ফেসবুকে পোস্ট আছে এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
এই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশ করার আগ পর্যন্ত ৩৬ হাজার বার শেয়ার এবং তাতে ১৩ হাজারের এর বেশি প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ইনসাইড রিউমারস। ভিডিও পর্যবেক্ষণে এতে কিছু অসামঞ্জস্যতা পরিলক্ষিত হয়।
প্রচারিত ভিডিওগুলোতে দাবি করা হয়, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবের বাসা থেকে ৭ বস্তা ও সিন্দুক ভর্তি টাকা উদ্ধার করেছে র্যাব। আটক করা হয়েছে চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টাকে।
এছাড়াও ভিডিওর শুরুতেই একাত্তরের টিভির ফুটেজ দেখানো হয়। যেখানে বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবকে রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
এ নিয়ে ইনসাইড রিউমারের কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে অনুসন্ধানে জানা যায়, একাত্তরে টিভির ভিডিওটি ২০২৩ সালের ২১ নভেম্বরের। সে সময় বিচারককে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও আদালতে হাজির না হওয়ায় হাবিবুর রহমানকে রাজধানীর মিরপুরের ডিওএইচএস এলাকা থেকে র্যাব গ্রেফতার করে।
এছাড়া, প্রচারিত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার নামে ৭ বস্তা ও সিন্দুক ভর্তি টাকা পাওয়ার ভিডিওটিও সঠিক নয়। প্রথম আলো, নিউজ টোয়েন্টিফোর এবং জাগো নিউজের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিও আসলে ২০১৯ সালের।
সে সময় অবৈধ ক্যাসিনো বাণিজ্যের সাথে জড়িত থাকায় ঢাকার গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক ভূঁইয়া এবং তার ভাই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুপম ভুঁইয়ার বাসায় র্যাব অভিযান চালিয়ে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার এবং অস্ত্র উদ্ধার করে। এখানে হাবিবুর রহমানের নামে প্রচারিত ভিডিওর হলুদ বস্তা, সিন্দুক, বাসা ও অভিযান চালানো র্যাব সদস্যের হুবহু মিল পাওয়া যায়।
সার্বিক দিক বিবেচনায় এটি স্পষ্ট যে, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবের বাসা থেকে ৭ বস্তা ও সিন্দুক ভর্তি টাকা পাওয়ার শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।