সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে “সরকারি কর্মকর্তা জামায়াত নেতার কথা মতো ফাইলে স্বাক্ষর করেননি বলে তাকে খুন করা হয়েছে” দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে।
এই দাবিতে ফেসবুকে পোস্ট আছে এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত একটি ভিডিও এই প্রতিবেদন প্রকাশ করার আগ পর্যন্ত প্রায় ৭ লক্ষ ৩৬ হাজার বার দেখা হয়েছে। পাশাপাশি আটশো’র উপরে শেয়ার এবং চারশো’র বেশি প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে।
প্রচারিত ভিডিওগুলোতে দাবি করা হয়, সরকারি কর্মকর্তা জামায়াত নেতার কথা মতো ফাইলে স্বাক্ষর করেনি বলে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, দুজন ব্যক্তি একটি মানবদেহ সিড়ি দিয়ে টানতে টানতে ওপরে তুলছেন।
অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ইনসাইড রিউমারস। ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে অনুসন্ধানে দেশীয় কোনো গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ কিংবা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে দাবির বিষয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়। এটি ভারতের বিহার রাজ্যের একটি সরকারি মেডিকেলের। বিষয়টি নিয়ে দৈনিক উড়িষ্যা পোস্ট গত ১২ আগস্ট একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিহারের বেতিয়ায় সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্ট্রেচার ছাড়া মরদেহ টেনেহিঁচড়ে পোস্টমর্টেম রুমে নেওয়ার ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে সবার নজরে এসেছে। যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও মানবেতর।
প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, মৃতদেহটি বিহারের বেতিয়া–নৌতান রোড থেকে পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। তবে স্ট্রেচারে মরদেহ না নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে টেনে নেওয়া হয়। যার ফল হসপিটাল কতৃপক্ষকে এলাকাবাসী ও নেটিজেনদের সমালোচনার মুখে পড়েছে।
সেই ঘটনাকেই সাম্প্রতিক কালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বাংলাদেশের ঘটনা বলে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে যে এটি জামায়াত নেতার কথা না শোনার ফল।
সুতরাং সার্বিক দিক বিবেচনায় এটি স্পষ্ট যে, সরকারি কর্মকর্তা জামায়াত নেতার কথা মতো ফাইলে স্বাক্ষর করেননি বলে তাকে খুন করা হয়েছে দাবিতে যে ছবিটি প্রচার করা হচ্ছে সেটি বাংলাদেশের নয়।