Home / জাতীয় / ‘সাভারে সেনানিবাসে বিদ্রোহ’ দাবিতে খাগড়াছড়ির দিঘীনালার পুরনো ভিডিও প্রচার

‘সাভারে সেনানিবাসে বিদ্রোহ’ দাবিতে খাগড়াছড়ির দিঘীনালার পুরনো ভিডিও প্রচার

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে “এই মুহুর্তে সাভার ক্যান্টরমেন্টে সেনাবাহিনীর মধ্যে বিদ্রোহ চলছে, পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সফরের প্রতিবাদে” দাবিতে ১৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, রাতের আঁধারে মধ্যে চারদিক থেকে গুলির বিকট শব্দ ভেসে আসছে। 

এই সংক্রান্ত ফেসবুক পোস্ট রয়েছে এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত একটি ভিডিও এই প্রতিবেদন প্রকাশ করার আগ পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার বার দেখা হয়েছে। পাশাপাশি ভিডিওটিতে পঞ্চাশের উপরে শেয়ার এবং ভিডিওতে দেড়শোর বেশি প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে।

ইনসাইড রিউমারসের অনুসন্ধান 

ইনসাইড রিউমারসের প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়; বরং গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ির দিঘীনালার একটি ভিডিও৷ 

ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম সার্চ করে দেখা যায়, ২০২৪-এর ১৯ সেপ্টেম্বর পার্বত্য অঞ্চল বার্তা নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ১৯ সেকেন্ডের একটি শর্টস প্রচার করে। ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়, “অশান্ত পাহাড়, খাগড়াছড়ির দিঘীনালা’র ১৯ সেপ্টেম্বরের রাত।”

ভিডিওটির সঙ্গে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হবহু মিল পাওয়া পায়। পার্বত্য অঞ্চল বার্তা নামের ইউটিউব চ্যানেল থেকে ওই ভিডিও ডাউনলোড করে সম্প্রতি ফেসবুকে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে ছড়ানো হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে ইনসাইড রিউমারস। কারণ, মূল ভিডিও’র সঙ্গে ফেসবুকে ব্যক্তিগত একাউন্ট থেকে পোস্ট করা ভিডিও’র রেজ্যুলেশনের বিস্তর পার্থক্য দেখা যায়৷ 

বিষয়টি নিয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে অনলাইন ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম chtnews.com এর ফেসবুক পাতায় গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বরের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া পাওয়া যায়। ভিডিওর ক্যাপশনে থেকে জানা যায়, “দীঘিনালায় পাহাড়িদের ওপর সেটলার হামলার প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি-পানছড়ি সড়কে রেডস্কোয়ার এলাকায় অবরোধকারী জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে সেনাবাহিনী গুলিবর্ষণ করে। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ রাতে এ ঘটনা ঘটে।”

এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামভিত্তিক আরেকটি সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “১৯ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪টার দিকে বাঙালি ছাত্র পরিষদের ব্যানারে সেটেলার বাঙালিরা দীঘিনালা উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশ শেষে তারা জুম্মদের উপর লাঠি ও ইট-পাটকেল দিয়ে হামলা চালায়। এতে রিপুয়ে চাকমা নামে একজন আহত হয়। এখান থেকেই ঘটনার সূত্রপাত।”

প্রতিবেদনে বলা হয়, “পরবর্তীতে সেনাবাহিনী সেখানে এসে জুম্মদের সরিয়ে দেয়। দফায় দফায় চলা এই হামলায় ধন রঞ্জন চাকমা (৫২) গুরুতর আহত হয়ে মারা যান, এবং ৪ জন জুম্ম আহত হন বলে জানা গেছে।”

সুতরাং, সার্বিক অনুসন্ধানে স্পষ্ট হওয়া যায় যে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি একটি ভিন্ন ঘটনার পুরনো ভিডিও। 

Tagged: