সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ছড়ানো একটি ভিডিওতে এক তরুণকে দড়ি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় দেখা যায়।
ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে, “জামালপুরে গজরা বাজারে কৃষি ব্যাংকের ছাদে হাত-পা বাঁধা অবস্থা পাওয়া এক ছাত্রলীগ নেতাকে পাওয়া গেছে। ছেলেটি আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান এবং কলেজ শাখা ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন। তাকে খুঁটিতে বেঁধে রশি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে হয়।”
এই দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট আছে এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
উক্ত দাবিতে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর ভেরিফাইড ফেসবুক পাতায়ও একটি ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
ইনসাইড রিউমারসের অনুসন্ধান
অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ইনসাইড রিউমারস।
ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতিতে অনুসন্ধানে ২০২৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি Nasir Uddin নামে একজনের ফেসবুক প্রোফাইলে একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টের ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল লক্ষ্য করে ইনসাইড রিউমারস।
নাসির উদ্দিন নামের ঐ ব্যক্তির পোস্টে বলা হয়, “চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার গজরা বাজার কৃষি ব্যাংকের ছাদে শাহাদাত হোসেন নামে এক তরুণের বাঁধা অবস্থায় লাশ পাওয়া গেছে।”
এছাড়াও বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনসহ চ্যানেল আই ও ডিবিসি নিউজের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে একাধিক ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিও থেকে জানা যায়, “চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার গজরা কৃষি ব্যাংকের নৈশ্য প্রহরী শাহাদাত হোসেন সাজ্জাদ নামে এক তরুণের হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।”
জানা যায়, সাজ্জাদ দুই মাস ধরে ব্যাংকে নৈশ প্রহরীর চাকরি করে। সেদিন রাতের ডিউটি শেষ করে বাড়ি না ফেরায় খুঁজতে থাকেন পরিবারের সদস্যরা। পুলিশের অনুমান, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতিতে অনুসন্ধানে একাধিক গণমাধ্যমেও উক্ত
বিষয়ে প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। অনুসন্ধানে দেশীয় গণমাধ্যম “নিউজ টুয়েন্টিফোর” “চাঁদপুরে নৈশপ্রহরীর হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায় ইনসাইড রিউমারস।
এছাড়া আলোকিত বাংলাদেশ, আমার সংবাদ, একুশে সংবাদে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও একই তথ্য পাওয়া যায়।
অর্থাৎ, কোনোরকম তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিতে পুরনো ভিডিওটিকে সাম্প্রতিক বলে প্রচার করা হচ্ছে।