সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে “যশোর শার্শা উপজেলা মান্দারতলা এবং স্বরূপদাহ সংলগ্ন ব্রীজের সামনে পানিতে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির লাশ পাওয়া গেছে” দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে।
এই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট আছে এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত একটি ভিডিও ৪৮ হাজারের বেশিবার দেখা হয়েছে এবং শেয়ার করা হয়েছে ৩৪৮ বার।
ইনসাইড রিউমারসের অনুসন্ধান
শুরুতেই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ইনসাইড রিউমারস। একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন ও ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, উক্ত ভিডিওতে দাবি করা মৃতদেহ উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতির নয়।
প্রথমেই আলোচিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতিতে অনুসন্ধানে ডিভিসি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও পাওয়া যায়। এই ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল পাওয়া যায়।
তবে ভিডিওর কোথাও যশোরে শার্শা উপজেলার আওয়ামী লীগ সভাপতির কথা উল্লেখ নাই। ভিডিও বিবরণী থেকে জানা যায়, “২২ আগস্ট দুপুরে শার্শা উপজেলার মালশাকুড় ব্রিজের কাছে খাইরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির মৃতদেহ ভাসতে দেখে এলাকাবাসী। পরে পুলিশের সহায়তায় লাশ উদ্ধার করা হয়।”
এছাড়া অনুসন্ধানে গত ২৩ আগস্ট এনটিভির ওয়েবসাইটে “শার্শায় নিখোঁজের একদিন পর যুবকের মরদেহ উদ্ধার” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “যশোরের শার্শা উপজেলায় খায়রুল ইসলাম (৩৫) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার স্বরুপদাহ গ্রামের মালশাকুড় ব্রিজের নীচ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।”
পুলিশ জানায়, “বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বিকেলে খায়রুল ইসলাম ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। পরদিন বিকেলে মালশাকুড় ব্রিজের নিচে তার মরদেহ পানিতে ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।”
আরও অনুসন্ধানে দৈনিক ইত্তেফাক, বাংলাদেশ প্রতিদিন সহ আরও কিছু গণমাধ্যমে একই তথ্য পাওয়া যায়। তবে কোথায় উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতির কথা বলা হয়ন।
বরং দৈনিক ইত্তেফাক ও বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নিহত খাইরুল ইসলাম বিএনপির কর্মী ছিলেন।
এছাড়া, ২০২৪ সালের ২০ এপ্রিল ঢাকা টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, যশোরের শার্শা উপজেলার আওয়ামী লীগ সভাপতির নাম সোহরাব হোসেন।
সুতরাং, সার্বিক পর্যবেক্ষণে এটি স্পষ্ট যে যশোরের শার্শা উপজেলায় আওয়ামী লীগের সভাপতি লাশ ভেসে ওঠার দাবিটি সঠিক নয়। বরং নিহত খায়রুল ইসলাম স্থানীয় বিএনপি রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।