Home / জাতীয় / সেন্টমার্টিন হস্তান্তর নিয়ে ট্রাম্পের সাথে ড. ইউনূসের কথা হবার মিথ্যা দাবি

সেন্টমার্টিন হস্তান্তর নিয়ে ট্রাম্পের সাথে ড. ইউনূসের কথা হবার মিথ্যা দাবি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে “চুনাল টারাঙ্ক বলতেছে ইউনুস এমন কাজ করেছে দেশ থেকে এখন পালিয়ে যেতে হবে। কারণ বাংলার জনগণ সেন্টমাটি নিতে দিবে না” (বানান অপরিবর্তিত) শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে।

ভিডিওতে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইংরেজিতে কথা বলতে শোনা যায়। সেটা বাংলা করলে হয়, “আমি মোহাম্মদ ইউনূসের সাথে কথা বলেছি সেন্ট মার্টিনকে দ্রুত হস্তান্তর করার জন্য। আমরা মিয়ানমার কোস্টগার্ডের ও আরাকান আর্মির বিষয়েও আলোচনা করেছি। ইউনূস খুব ভালোভাবে একমত হয়েছেন।”

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট আছে এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রায় ২ লক্ষ ৭ হাজার বার দেখা হয়েছে এবং ভিডিওটি প্রায় ১ হাজার ৬০০ বার শেয়ার করা হয়েছে।

ইনসাইড রিউমারসের অনুসন্ধান 

প্রথমেই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক কোনো গণমাধ্যমে উক্ত দাবির পক্ষে কোনো প্রকার তথ্য কিংবা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ইনসাইড রিউমারস। ভিডিও পর্যবেক্ষণে এতে কিছু অসামঞ্জস্যতা পরিলক্ষিত হয়। যেমন: প্রথমেই লক্ষ্য করা যায় ছবির ভিজ্যুয়াল কোয়ালিটি অনেকটা কৃত্রিম বা “ডিপফেক”-এর মতো। ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখমণ্ডলে আলো, ছায়া অস্বাভাবিকভাবে মসৃণ, যেন অতিরিক্ত ফিল্টার ব্যবহার করা হয়েছে।

তার ঠোঁটের নড়াচড়া অনেক ধীরগতির, যা তাঁর কথার সঙ্গে সঠিকভাবে মেলেনি। আরও একটি বিষয় হলো, ভিডিওটিতে ব্যাকগ্রাউন্ড অনেকটাই ঝাপসা। এআই দিয়ে তৈরি কনটেন্টে ব্যাকগ্রাউন্ডকে সাধারণত ঝাপসা করে দেওয়া হয়, যাতে মুখ বা বস্তুতে ফোকাস থাকে এবং ত্রুটি ধরা না পড়ে।

সব মিলিয়ে, ভিডিওটি মানবীয় আচরণগত দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্লেষণ করলে এটিকে একটি AI বা Deepfake প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা ভিডিও বলেই পরিলক্ষিত হয়।

এর উপর ভিত্তি করে ভিডিওটি AI দিয়ে তৈরি কি না, তা যাচাই করতে ডিপফেক স্ক্যানার টুল ‘DeepFake-O-Meter’ ব্যবহার করলে ভিডিওটিকে ১০০% ডিপফেক বলে নিশ্চিত হওয়া যায়।

এছাড়া আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে একই ভিডিওর অনুরূপ আরও একটি ভিডিও পাওয়া যায়; যেটিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অন্য একটি বিষয়ে কথা বলতে শোনা যায়। ইনসাইড রিউমারসের অনুসন্ধানে ঐ ভিডিওটিও এআই দ্বারা তৈরি করা হয়েছে বলে ধরা পড়ে।

অর্থাৎ এআই নির্মিত ভিডিওটি ২০২৪ সাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রয়েছে।

সুতরাং সার্বিক পর্যবেক্ষণে এটি স্পষ্ট যে, সেন্টমার্টিন হস্তান্তর করার বিষয়ে ড. ইউনূসের সাথে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোনো কথা হয়নি। উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি এআই দ্বারা তৈরি।

Tagged: