Home / জাতীয় / শুধুমাত্র ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে বুয়েটের একজনের সরকারি চাকরির নিয়োগ আটকে আছে দাবিটি সঠিক নয়

শুধুমাত্র ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে বুয়েটের একজনের সরকারি চাকরির নিয়োগ আটকে আছে দাবিটি সঠিক নয়

সম্প্রতি ফেসবুকে একটি লেখা প্রকাশ করা হচ্ছে যেখানে দাবি করা হচ্ছে যে শুধুমাত্র ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে পুলক দেব পলাশ নামক বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একজনের পানি উন্নয়ন বোর্ডে নিয়োগ আটকে আছে। 

এরকম দাবি সম্বলিত পোস্ট পাওয়া গিয়েছে এখানে, এখানে এবং এখানে। পাশাপাশি সনাতন টিভি নামক একটি ফেসবুক পাতা থেকেও এরকম একটি পোস্ট করা হয়েছে। তবে সেখানে সরাসরি ধর্মের বিষয়টি উল্লেখ করা হয় নি, বরং প্রশ্ন করা হয়েছে কেন পুলক দেব পলাশের নিয়োগ আটকে আছে।

উল্লেখ্য, সবগুলো পোস্টেই একটি ইন্টারভিউ ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে যেখানে পুলক বলে দাবি করা একজন বলছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের চাকরিতে সুপারিশকৃত ১১১ জনের মধ্যে প্রথম হওয়া সত্ত্বেও এক বছর দুই মাস ধরে তার চাকরিটা হচ্ছে না। 

ইনসাইড রিউমারসের অনুসন্ধানে ১৭ জানুয়ারি দৈনিক মানব জমিনের একটি প্রতিবেদন পাওয়া গিয়েছে, যেটির শুরু হয়েছে পুলক দেব পলাশের কথা উল্লেখ করেই। 

তবে মানব জমিনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে নয়, বরং গত বছরের অক্টোবরে হওয়া পুলিশ ভেরিফিকেশনে পানি উন্নয়ন বোর্ডে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে চূড়ান্ত নিয়োগ আটকে গিয়েছে পুলকসহ পঁচিশ জনের। এই পঁচিশ জনের মধ্যে আটজন বুয়েটের। 

তদন্তে বাদ পরাদের মধ্যে আছেন ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) ১১জন, খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ৩জন আর চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) একজন। 

মানব জমিনের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে এই ২৫ জনের নিয়োগে আপত্তি জানিয়ে প্রতিবেদন দেয় রাষ্ট্রীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থা। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ওই আপত্তিপত্র আমলে নিয়ে ২৫ জনকে বাদ দিয়ে ৮৬ জন নিয়োগ দেন পানি উন্নয়ন বোর্ড।

নিজেদের সূত্রের বরাতে পত্রিকাটি দাবি করে তদন্তে সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তাদের নিয়োগ আটকে দেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে মানব জমিনের প্রতিবেদনে নিয়োগ বাতিলের কারণ জানাতে লুকোচুরি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ জানানো হয়েছে। 

অন্যদিকে ফেসবুকের পোস্ট করা ভিডিওগুলোতে পুলক পরিচয়ে সাক্ষাৎকার দেওয়া ব্যক্তি কারণ জানা নেই বলে জানালেও মানব জমিনের প্রতিবেদনে তাকে কোট করে বলা হয়েছে যে রাজনৈতিক কারণ দেখিয়ে বাদ দেওয়া হয়েছে পুুলককে। 

সোমবার একই বিষয়ে একটি পোস্ট করা হয়েছে বুয়েটিয়ান – BUETian নামে একটি ফেসবুক পাতায়, যেখানে দাবি করা হয়েছে যে ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে আটকে থাকার বিষয়টি সঠিক নয়। পোস্টটিতে দাবি করা হয়েছে যে ২৫ জনের নিয়োগ আটকে আছে তাদের মধ্যে মুসলমানদের সংখ্যাই বরং বেশি। 

একই ফেসবুক পাতা থেকে ২৫ জুলাই পোস্ট করা হয় যে দীর্ঘ অপেক্ষার পর কোনো সুরাহা না হওয়ায় প্রার্থীরা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। 

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, নিয়োগ আটকে যাওয়াদের নিয়োগের বিষয়টির সুরাহা হয়েছে এমন কোন সংবাদ বিশ্বস্ত কোন গণমাধ্যমে পাওয়া যায়নি। তবে শুধুমাত্র ধর্মীয় কারণে নিয়োগ আটকে রাখা হয়েছে এমন দাবিটি যে মিথ্যা সেটি স্পষ্ট। 

Tagged: