সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সম্প্রতি “মাদারীপুরে ১৫ই আগষ্ট শোক দিবস পালন করায় প্রকাশ্যে তিন যুবলীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে ফ্যাসিস্ট ইউনুছ বাহিনী” দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে।
এই দাবিতে ফেসবুকে পোস্ট আছে এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত একটি ভিডিও এই প্রতিবেদন প্রকাশ করার আগ পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার বার দেখা হয়েছে। পাশাপাশি ভিডিওটি ছয়শো বারের বেশি শেয়ার এবং তাতে পাঁচশো প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে।
ইনসাইড রিউমারসের অনুসন্ধান
অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ইনসাইড রিউমারস। ভিডিও পর্যবেক্ষণে আলোচিত দাবির স্বপক্ষে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে, ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতিতে অনুসন্ধানে চলতি বছরের ৮ মার্চ বেসামরিক টেলিভিশন চ্যানেল “যমুনা টিভির” ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পায় ইনসাইড রিউমারস।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নে বালু ব্যবসাকে কেন্দ্র করে আপন দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও একজন মারা যান এবং আহত হয়েছেন ৫ জন।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, অবৈধ বালু ব্যবসাক ও আধিপত্য বিস্তারের জেরে খোয়াজপুর জামে মসজিদের সামনে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ।
পরবর্তীতে ভিডিওটির সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে জাতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে অনুসন্ধান চালায় ইনসাইড রিউমারস। এ বিষয়ে গত ৮ মার্চ দেশীয় গণমাধ্যম প্রথম আলো, আজকের পত্রিকা ও দৈনিক ইত্তেফাক এর প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মাদারীপুরে বালুর ব্যবসা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে তিন ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন প্রতিপক্ষের লোকজন। এ সময় হামলায় আরও দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহত তিন ভাই হলেন আতাউর রহমান সরদার ওরফে আতাবুর (৩৫), সাইফুল ইসলাম ওরফে হিটার সাইফুল (৩০) ও তাঁদের চাচাতো ভাই পলাশ সরদার। এর মধ্যে সাইফুল খোয়াজপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। হামলার সময় তাদের ঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট করে প্রতিপক্ষের লোকজন আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে।
অর্থাৎ ভিডিওটি ১৫ আগস্টের শোক পালনের জেরে হত্যাকান্ডের নয়; বরং এটি মাদারীপুরে অবৈধ বালু ব্যবসা ও আধিপত্যের জেরে সংগঠিত হত্যাকান্ডের ঘটনা।